বিজ্ঞানের ফিল্টার পেপার
বিজ্ঞান গতিশীল একটি জ্ঞানের শাখা। সে নিজেই তার ভূলকে শুধরে নিতে পারে। আজ হোক বা কাল। এখানে কেউ ভূল থিউরী বা তত্ত্ব দিয়ে টিকে থাকতে পারে না।আজকে যে তত্ত্ব বা আবিষ্কারকে আমাদের প্রজন্মের জন্য সেরা বলছি সেটা পরবর্তী প্রজন্মে গিয়ে ভূল সাব্যস্ত হতে পারে। কারন, বিজ্ঞান মিথ্যাকে ছুড়ে মারে, সে অকাট্য প্রমানের অনুগামী। সে নতুনত্বের জন্য ক্ষুধার্ত। এটাই বিজ্ঞানের স্বাভাবিক নিয়ম। এই নিয়মের বত্যয় ঘটলে সেটা অপবিজ্ঞান হয়ে যায়। সেটা আর বিজ্ঞান থাকে না।
image source: freepik |
আজকে যে তত্ত্ব বা আবিষ্কারকে আমাদের প্রজন্মের জন্য সেরা বলছি সেটা পরব-র্তী প্রজন্মে গিয়ে ভূল সাব্যস্ত হতে পারে। কারন, বিজ্ঞান মিথ্যাকে ছুড়ে মারে, সে অকাট্য প্রমানের অনুগামী।সে নতুনত্বের জন্য ক্ষুধার্ত।
কারন, বিজ্ঞানের যে কোনো আবিষ্কার বা গবেষণা যে কোনো সময় মিথ্যা প্রমান করার মত যোগ্য হতে হয়। ভালো করে খেয়াল করুন, আমি “মিথ্যা” বলিনি, “মিথ্যা বা ভূল প্রমান করার যোগ্য” এর কথা বলছি। মানে একটা পরীক্ষাকে বা তত্বকে তার নির্ভূলতা যাচাই করার জন্য বার বার পূনরাবৃত্তি করার ক্ষমতা। এটাকে বিজ্ঞানের ফিল্টার পেপার বলা যেতে পারে। কিন্তু কোনো তত্ত্ব বা আবিষ্কারকে যদি এই ফিল্টার পেপার দিয়ে অতিক্রম না করানো যায় তাহলে সেটা বিজ্ঞান না। কোনো জ্ঞানকে বা তত্ত্বকে বিজ্ঞান হতে হলে এই ফিল্টার অতিক্রম করে তাকে টিকে থাকতে হবে। অপবিজ্ঞান বিজ্ঞান না কারন সে এই ফিল্টার অতিক্রম করতে পারে না।
যেমন, বিজ্ঞানী লর্ড কেলভিন কে আপনারা নিশ্চয়ই চেনেন। তাপমাত্রার কেলভিন স্কেল তার নামানুসারে হয়েছে। তিনি পৃথিবীর বয়স হিসেব করেছিলেন ২৪ মিলিয়ন বছর। কিন্তু বিজ্ঞানী রাদারফোর্ড রেডিও আইসোটপ ডেটিং এর দ্বারা এটাকে ভূল প্রমান করেন।
ডিমিত্রি মেন্ডেলিভ, যিনি পর্যায় সারণির জনক। ইলেক্ট্রন ও রেডিয়েশন বা বিকিরণ বলতে কিছু যে আছে সেটাকে তিনি অস্বীকার করতেন।
আবার, বিজ্ঞানী থমসন, যার হাত ধরে ইলেক্ট্রনের আবিষ্কার। তিনি ইথার এর স্বপক্ষে বলেছিলেন, “এটা বাতাসের অক্সিজেনের মতই আমাদের জন্য প্রয়োজনীয়”। কিন্তু বিজ্ঞানী মাইকেলসন ও মর্লি পরবর্তীতে প্রমান করেন যে, “ইথার বলতে আসলে কিছু নেই”।
বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী আইনস্টাইন “এই মহাবিশ্ব স্থির ও অপরিবর্তণীয়” মনে করাকে তার জীবনের সবচেয়ে বড় ভূল বলে অবহিত করেছেন। আপেক্ষিকতার সাধারন তত্ত্ব সমাধান করার সময় তিনি সমীকরন কষে বুঝতে পারেন মহাবিশ্ব গতিশীল ও প্রসারিত হচ্ছে। কিন্তু তার পূর্বাপর ধারনা “এই মহাবিশ্ব স্থির ও অপরিবর্তণীয়” এর জন্য ওই সমীকরনে নতুন আরেকটি ধ্রুবক যোগ করেন। যা মহাজাগতিক ধ্রুবক নামে পরিচিত। কিন্তু পরবর্তীতে বিজ্ঞানীরা তার এই ভূল থেকেই ডার্ক এনার্জির ধারণা পান।
আসলেই, বিজ্ঞান অনেক চমৎকার।। এসব উদাহারনের মাধ্যেমে কোনো বিজ্ঞানীকে আমি ছোট করছি না। বিজ্ঞানে জ্ঞানের উন্নতি কিভাবে সাধিত হয় সেটাই আমি বুঝাতে চাচ্ছি।
Source: Green chemistry toolkit
No comments