সূর্যের ব্যবচ্ছেদঃঃ বর্ণমন্ডল
আলোকমন্ডলের উপরিস্থিত বর্ণমন্ডল (chromosphere) আবরনটি প্রায় ২০০০ কিলোমিটার পুরুত্বের। এর নিম্নাঞ্চলের তাপমাত্রা প্রায় ৪০০০ ডিগ্রী কেলভিন এবং বহিরাংশের তাপমাত্রা প্রায় ৮০০০ ডিগ্রী কেলভিন। কেন্দ্র থেকে পর্যায়ক্রমে বহিস্থ সকল অঞ্চলে তাপমাত্রা হ্রাস পেলেও, এ অঞ্চলে হঠাৎ তাপমাত্রা কেন বৃদ্ধি পায় সে প্রশ্নের সঠিক উত্তর এখনো জানা নেই বিজ্ঞানীদের। তবে তারা এই অঞ্চলে উপস্থিত চৌম্বকক্ষেত্রকেই এই বিশেষ পরিবর্তনের জন্য দায়ী করেছেন। এই অঞ্চলের গড় ঘনত্ব পানির তুলনায় প্রায় ১০ কোটি ভাগের এক ভাগ। শক্তিশালী টেলিস্কোপ ছাড়া সাধারণত এই অঞ্চলটি দেখা যায় না। এই অঞ্চলের নির্গমন রেখা বর্ণালী বিশ্লেষণ করলে লাল রঙ্গের দৃশ্যমান আলোর বিকিরন দেখা যায়। এখানে prominence, spicules,granules, flares প্রভৃতি সৌর ঘটনা দেখা যায়।
চিত্র: সূর্যের বর্ণ মন্ডল ও এর বিভিন্ন সৌর ঘটনা
( image source: esa.int)
spicules হল উত্তপ্ত গ্যাসের প্রবাহ দ্বারা তৈরী গম্বুজাকৃতির এক বিশেষ গঠন। বর্ণমন্ডলে এদেরকে প্রচুর পরিমানে পাওয়া গেলেও এরা অস্থায়ী। prominences হলো উত্তপ্ত গ্যাসে তৈরী উজ্জ্বল লুপের মত গঠন। যা বর্ণ মন্ডলের বহিরাংশের ধনুকের মত লুপ তৈরী করে এবং প্রায়ই পরবর্তী অঞ্চল (সৌরমুকুটে) প্রবেশ করে। কিছু prominences এর প্রস্থ পৃথিবীর সমান হতে পারে। আবার এরা সূর্যের অর্ধেক ব্যাস বরাবর বিস্তৃত হতে পারে। prominences প্রায়ই সৌরকলঙ্কের সাথে একীভূত হয়।
Plages হল উজ্জ্বল, মেঘের মত গঠনের, যা সৌরকলঙ্কের নিকটে দেখা যায়। prominences এর নিকটেই coronal mass ejections (CMEs) and flares( অগ্নিতরঙ্গ) নামক ভয়ঙ্কর শক্তিশালী চরম সক্রিয় ঘটনা ঘটে। এরা প্রথমত একটি লুপ তৈরী করে, যা কয়েক ঘন্টার মধ্যে বিস্ফোরিত হয়। এই বিস্ফোরনের মাধ্যেমে এক্সরে, আলট্রাভাওলেট রশ্মি সহ অনেক সৌর পদার্থ বমির মত সূর্য থেকে বেরিয়ে এসে মহাশূন্যে ছড়িয়ে পড়ে। যেগুলো ৮ মিনিটে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করে এবং বায়ুমণ্ডলের উপরের আবরনের আয়নাইজেশন (ionization) প্রক্রিয়াকে চরমভাবে বাধাগ্রস্থ করে।
ট্রানজিশন অঞ্চল (Transition Region)
সৌরবায়ুমন্ডলের সবচেয়ে সংকীর্ণ আবরন, যা বর্ণমন্ডল এবং সৌরমুকুটের মিলনস্থল। এর পুরুত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার। এখানে তাপমাত্রা ৮০০০ ডিগ্রী কেলভিন হতে ৫ লক্ষ কলভিনে পরিবর্তিত হয়। বিজ্ঞানীরা তাপমাত্রার এই হঠাৎ পরিবর্তনের জন্য এখানে প্রচুর পরিমানে উপস্থিত চৌম্বকক্ষেত্রকে দায়ী করেছেন। তবে এর সঠিক কারন বিজ্ঞানীদের এখনো অজানা।
উৎসঃ উইকিপিডিয়া ।।
No comments