গেইসারের রহস্যের গভীরে
একটি গল্প দিয়েই শুরু করা যাক। দুই বন্ধু ইকরাম ও রিফাত ভ্রমন করতে খুবই পছন্দ করে ।ইকরাম একজন ভালো ফটোগ্রাফার এবং রিফাত বেশ সাহসী। তো, একদিন তারা আমেরিকার ইয়োলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কে ঘুরতে গেলো। ইকরাম প্রকৃতির ছবি তুলতেছিলো, তখন রিফাত পানির একটি রিসার্ভারের সামনে দাড়িয়ে বলল, “দস্ত, আমার একটা ছবি তোল”। ইকরাম ক্যামেরা ফোকাস করে যখনি ক্যাপচারিং বাটনে ক্লিক করবে তখনি রিফাতের পাশে মাটি থেকে হটাৎ ধোঁয়া বের হতে দেখল। অমনি চিৎকার করে উঠল।রিফাত তাকে সান্তনা দিয়ে বলল্, “শোন! বাচ্চা ছেলের মত ভয় পাস না, বরং দেখি কি ঘটে?”
![]() |
চিত্রঃ গেইসার ( image source: wikipedia) |
একটি গল্প দিয়েই শুরু করা যাক। দুই বন্ধু ইকরাম ও রিফাত ভ্রমন করতে খুবই পছন্দ করে ।ইকরাম একজন ভালো ফটোগ্রাফার এবং রিফাত বেশ সাহসী। তো, একদিন তারা আমেরিকার ইয়োলোস্টোন ন্যাশনাল পার্কে ঘুরতে গেলো। ইকরাম প্রকৃতির ছবি তুলতেছিলো, তখন রিফাত পানির একটি রিসার্ভারের সামনে দাড়িয়ে বলল, “দস্ত, আমার একটা ছবি তোল”। ইকরাম ক্যামেরা ফোকাস করে যখনি ক্যাপচারিং বাটনে ক্লিক করবে তখনি রিফাতের পাশে মাটি থেকে হটাৎ ধোঁয়া বের হতে দেখল। অমনি চিৎকার করে উঠল।রিফাত তাকে সান্তনা দিয়ে বলল্, “শোন! বাচ্চা ছেলের মত ভয় পাস না, বরং দেখি কি ঘটে?”
তারপর মাটি ফেটে তীব্র বেগে উর্ধমূখে পানি বের হতে লাগল এবং তারা আশ্চর্য হয়ে গেলো। আর একসাথে বলে উঠল “ দারুণ তো!”
আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই, এরই নাম আসলে গেইসার।
বিশেষ Hydrogeological অবস্থার কারনে পাতলা ভূত্বক ভেদ করে ভূঅভ্যন্তর থেকে গরম পানি,(তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এর উপরে), বাষ্প নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর বিস্ফোরণাকারে উৎক্ষিপ্ত হয়ে পিচকারি বা ফোয়ারার মতো ঊর্ধ্বমুখী হয়ে কয়েক ফুট(সর্বোচ্চ ২০০ ফুট) পর্যন্ত স্তম্ভাকারে কিছু সময় ধরে ( সর্বোচ্চ ১০ মিনিট) সবিরাম চলাচল করলে তাকে গেইসার (Geyser)বলে।
![]() |
গেইসারের এনিমেশন ( উৎসঃ উইকিপিডিয়া) |
এটি একটি বিরল ঘটনা। বর্তমানে পৃথিবীব্যাপী প্রায় ১০০০ গেইসার আছে। আমেরিকার Yellowstone National Park এ আছে প্রায় ৪৬৫ টি সক্রিয় গেইসার। এখানেই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ওল্ড ফেইথফুল গেইসার সক্রিয়। যা হতে প্রতি ৩৫-১২০ মিনিট পর পর প্রায় ১.৫- ৫ মিনিট ধরে প্রস্রবণ ১০৬-১৮৫ ফুট পর্যন্ত উৎক্ষিপ্ত হয়।
![]() |
Image source: Byapon Magazine |
এছাড়া রাশিয়ার Dolina Geiserov, চিলির El Tatio, নিউজিল্যান্ডের Taupo Volcanic Zone আইসল্যান্ডের পুরো অঞ্চলের গেইসার উল্লেখযোগ্য।
![]() |
Image source: Byapon Magazine |
গেইসার সৃষ্টির প্রক্রিয়া :
তিনটি ভূতাত্বিক কারনে গেইসার তৈরী হয় -
১. প্রচন্ড তাপ : ভূঅভ্যন্তরে প্রচন্ড তাপ সৃষ্টিকারী পদার্থ যেমন গরম শিলা, ম্যাগমা উপস্থিতি গেইসার সৃষ্টির জন্য অপরিহার্য। এজন্য আগ্নেয়গিরি প্রবন এলাকায় এটি ঘটে থাকে।
২. পানির উপস্থিতি : সারফেসে বড় ধরনের পানির রিজার্ভার এর উপস্থিতিতে অভিকর্ষের টানে পৃথিবীর ২০০০ মিটার পর্যন্ত পানি নিচে নেমে প্রচন্ড তাপের সংস্পর্শে আসা অপরিহার্য।
৩. পাতলা ভূত্বক ও জলনির্গমন প্রনালী : পানি গরম হয়ে উর্ধমূখী চাপে জলনির্গমন(conduit) পথে বের হওয়ার জন্য ভূত্বক পাতলা হওয়া প্রয়োজন।
গরম পানি চারটি ধাপে উৎক্ষেপিত হয় :
Video credit: Seeker
১. গরম পানি হতে বাষ্প বের হওয়া
২. টগবগানো পানি উর্ধমূখে স্ফীত হওয়া ( একটি পানি বুদবুদের মত অবস্থা, যেটির যেকোনো সময় ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে)
৩. পাতলা ভূপৃষ্ঠ ভেঙ্গে যাওয়া
৪. পানি তীব্র বেগে উর্ধমূখে স্প্রে হওয়া
![]() |
Image source: Byapon Magazine |
উইকিপিডিয়া । (লেখকের এই লেখাটি ইতিপূর্বে ব্যাপন ম্যাগাজিনে এবং অনলাইন পোর্টাল স্কাই ডট বিশ্ব ডট কম এ প্রকাশিত)
No comments