গ্রাভিটি হিলের রহস্য


গাড়ি কথায় কথায় চলতে পারে?  নিশ্চয়ই সমতলে, ঢালু উঁচু নিচু পথে, আকাবাঁকা পথে। ইঞ্জিন বন্ধ অবস্থায় কোন গাড়ি সাধারণত ঢালু পথে উপর হতে নিচে সহজে নামতে পারে।আমি যদি বলি ঢালু পথে  ইন্জিন বন্ধ গাড়ি নিচ হতে উপরেও উঠতে পারে এমনকি তা হতে পারে ঘন্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে, তবে কি বিশ্বাস করবেন?  
সাধারনত  একটি বস্তু ঢালু পথে উপর হতে নিচে কোনো বল প্রয়োগ ছাড়াই নামে। কারন পৃথিবী অভিকর্ষ বল দ্বারা প্রতিটি বস্তুকে কেন্দ্রের দিকে টানে। কিন্তু এমনটা অস্বাভাবিক মনে হয় যখন কোনো বস্তু পাহাড়ের ঢালু পথে নিচ হতে উপরে ওঠে কোনো প্রকার বল প্রয়োগ ছাড়াই। আশ্চর্যজনক হলেও আপাত দৃষ্টিতে এমনটি সত্য। এই বিশেষ ধরনের পাহাড়ের নাম "গ্রাভিটি হিল / ম্যাগনেটিক হিল"। বাংলায় বললে " মহাকর্ষ পাহাড়"। অনেকেই একে রহস্যময় পর্বত বা রহস্যময় স্থান হিসেবে অভিহিত করে থাকেন। এসকল স্থানে নিষ্ক্রিয় গিয়ারে রাখা কোন গাড়ি আপনা আপনি চলতে থাকে
তাই চালক বা দর্শকের কাছে গাড়িটি উঁচু রাস্তা বেয়ে উঠে যাচ্ছে বলে মনে হয়। আবার রাস্তায় পানি ঢালা হলে তা গড়িয়ে উঁচু রাস্তায় উঠছে বলে মনে হয়।এরকম প্রায় একশ পাহাড় আছে এই পৃথিবীতে। যেমন :
ওয়াদে জ্বিন, মদিনা, সৌদিআরব; চারটিয়ারভিল,  কুইবেক কানাডা ; ওরোরা, অস্ট্রেলিয়া ; লাদাখ,  ভারত ;
পর্যটকদের জন্য এসকল পাহাড় বেশ আকর্ষনীয়।এমন কিছু স্থান যেখানে পরিপার্শ্বিক দৃশ্যপট এমন একটি দৃষ্টি বিভ্রম সৃষ্টি করে যাতে একজন দর্শকের কাছে ঐ স্থানের একটি নিম্মমুখি ঢাল বিশিষ্ট রাস্তাকে উর্ধ্বমুখি ঢাল মনে হতে থাকে।
বিজ্ঞানীরা গ্রাভিটি হিলের রহস্য বের করেছেন। অনেকে মনে করেন, supernatural force  বা magnetic force এর কারনে এমনটি হয়ে থাকে, যা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার সাথে অমিল।
বিজ্ঞানীরা জিপিএস ব্যবহার করে নিশ্চিত যে, এটা মরীচিকার মতই একটি দৃষ্টি ভ্রান্তি,  যা optical illusion বা আলোক বিভ্রমের জন্য হয়ে থাকে। আশেপাশের গাছপালা, ঢালু এলাকা, আকাবাঁকা দিগন্তরেখা বা বাধাগ্রস্থ দৃষ্টিসীমার কারনে মানব চোখ ঐ এলাকার ঢাল নির্নয়ের জন্য কোনো প্রসঙ্গ কাঠামো খুঁজে পায়না ফলে মস্তিষ্কে এমন অনভুতি সৃষ্টি হয় যাতে ঐ এলাকাটিকে উর্দ্ধমূখী ঢালু বলে মনে হয়।

No comments

Theme images by JacobH. Powered by Blogger.